kolponar rong

বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলাম
এমন সময় বাবা বললো —
তোর কাছে কি কটা টাকা হবে ?
হঠাৎ কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হলো,
বাবার দিকে তাকিয়ে মনে পড়ে গেলো ,
সেই ক্লাস টু’এর একটি কথা।
বাবাকে বলেছিলাম — বাবা দু টাকা দেবে ?’
বাবা বলেছিলো — কেন ? কি করবি দু’টাকা দিয়ে ?
আমি বলেছিলাম — আইসক্রিম খাবো।
[ তখন এক টাকায় চারটে রঙিন আইসক্রিম অথবা বরফের সাথে নারকেল দেয়া দুটো আইসক্রিম পাওয়া যেতো ]।
বাবা দু’টাকার পরিবর্তে পাঁচ টাকা দিয়েছিলো ।
বাবা-মা আসলে বড় অদ্ভুত ক্যারেকটার,
তারা সারাজীবন চেষ্টা করেছেন —
তাদের সর্বোচ্চটা আমাদের দেবার জন্য ‌।
সময় কতোটা দ্রুত চলে যায়,
আজ বাবা অবসরপ্রাপ্ত।
কেন যেন খুব কান্না পেলো ।
কেন জানি না ।
ওয়ালেট হাতড়ে একশো টাকা বাদে ,
যা ছিলো —
সবটা বাবাকে দিয়ে দিলাম।
বাবা বললো — আরে পাগল, এতো দিয়ে
আমি কি করবো ?
আমি বললাম — বাইরে যাও, তোমার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দাও , চা জলখাবার খাও ।
আর কি !
বলেই উল্টো ঘুরে , হাঁটা শুরু করলাম —
নিজের চোখের জলটা লুকাতে ।
আপনজনের জন্য সময়মতো কিছু করতে
না পারলে কিসের চাকরি , কিসের ব্যবসা,
এসব দিয়ে কি হবে !
কিসের প্রাচুর্য, সবই তো ক্ষণস্থায়ী ।
আমি মনে করি , আমার বলে কিছু নেই ।
সব সাময়িকভাবে আমাকে
ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছেন ওপরওয়ালা ।
সবকিছুই ঠিকঠাক রয়ে যায় ।
থাকে না শুধু মানুষগুলো …..
সংগৃহীত ও সম্পাদিত / যতন চট্টোপাধ্যায় ।