সত্যিই ভাগ্য করে বউ পেয়েছিস বেটা

সত্যিই ভাগ্য করে বউ পেয়েছিস বেটা

অরুণ আর রক্তিমার বিয়ে হয়ে গেলো … গরীব ঘরের মেয়েটাকে এক কাপড়েই নিয়ে যেতে চেয়েছিল ইঞ্জিনিয়ার স্বামী কিন্তু আত্মসন্মানের খাতিরে তাতে রাজি হননি রক্তিমার বাবা … যৎসামান্য আয়োজন করে মেয়েকে বিদায় দিতে চেয়েছেন তিনি …

কিন্তু বিয়ের দিন পাত্রপক্ষের দুঃসম্পর্কের এক জেঠিমার মুখে , মাংসের নুনটা খুব বেঁধেছে … তাই সে খেয়ে যাওয়ার আগে হাসাহাসির ছলে রক্তিমাকে কথা শুনিয়ে গেলো , ” বাড়ির সবকিছুই যখন যৎসামান্য তখন মাংসের নুনটা এতো এলাহি করার কি দরকার ছিল বাপু ! আমাদের বললে রাঁধুনি পাঠিয়ে দিতাম , তাও লোকগুলো দু গাল খেতে পারতো ! “

কিন্তু বুদ্ধিমতী মেয়েটি তার বাবার ছলছলে চোখের দিকে চেয়ে হাসিমুখে উত্তর দিলো , ” জেঠিমা , বাবার বহুবছর হকারি করে সঞ্চয় করা অর্থ ঢেলে দিয়ে ঘাম ঝরানো টাকায় আজকের বিয়ের সমস্তটা আয়োজন করেছে । নুন ওতে পরিমান মতোই দেওয়া ছিল কিন্তু তার পিছনে অনেকটা চোখের জল আর সারাজীবনের ঘাম লেগে ছিল যে । তাই স্বাদটা একটু বেশিই নোনতা লেগেছে হয়তো ” ….

সত্যিই তার উত্তর শুনে তার বাবা হাউমাউ করে কেঁদে ফেললো … জেঠিমাও মেয়েটির মুখের দিকে একভাবে চেয়ে রইলো , উত্তর দিতে পারলো না … আর অরুণের বাবা হাসিমুখে ছেলেকে পিঠ চাপড়ে বললো , ” সত্যিই ভাগ্য করে বউ পেয়েছিস বেটা ” …

নতুন বউকে পালকি করে কেন আনা হয় জানিস?

এরকম ভাবেই দিনের পর দিন বহু বাবা তার সর্বস্বটুকু দিয়ে অন্যের বাড়িতে সুখী থাকতে পাঠায় তার মেয়েকে … তাই মাংসের ঝোলটা যদি নোনতাও হয় কখনো , তবে একটা দিন নয় মুখ বুজে খেয়েই নেবেন … ওদের ভুলত্রুটি খুঁজে দুটো কটুকথা শুনিয়ে নিজেদের ছোটো করবেন না …

কলমে ~ গৌরব চক্রবর্তী

সন্দীপ মহেশ্বরীর জীবনী