বাড়ির বৌমার জন্য ষষ্ঠীর আয়োজন

বাড়ির বৌমার জন্য ষষ্ঠীর আয়োজন শাশুড়ী মায়ের এই ইচ্ছে নাকি অনেক দিনের সে শুধু জামাইদের না ঘরের বউকেও তার যোগ্য সম্মান দিবে।

বিয়ের পর প্রথম ষষ্ঠী ছিলো সেবার কিন্তু আমাকে যেতে দেওয়া হবে না ও বাড়িতে। কারণ অভ্রর দুই দিদি আর জামাইবাবুরা আসবে।

এ নিয়ে মা-বাবার বেশ মন খারাপ অভ্রও বারবার বলছে কিন্তু কিছুই করার নেই শাশুড়ী মায়ের ঘোর আপত্তি এ বছর আর যাওয়া হবে না আমাদের। অভিমান নিয়ে সারাদিন এ রান্না সে রান্না করে গেলাম, বাসায় কতশত পদের রান্না রাজকীয় কান্ড অথচ মন পড়ে আছে ও বাড়ি।

মাকে সকালে ফোন দিলাম মা ও অভিমানে ফোন ধরেনি।বাবাও ফোন ধরলো না। একরাশ মন খারাপ নিয়ে কাজ করছি কারণ হাজার হলেও এখন আমি এ বাড়ির বউ তাই দায়িত্ব করে যাচ্ছি নিরবে।

এক এক করে অভ্রর দিদি জামাইবাবুরা চলে আসলো হাতে রসগোল্লার হাড়ি কত উপহার।শাশুড়ী মা আমাকে ফ্রেশ হয়ে একটা নতুন শাড়ি দিয়ে পড়তে বললো।

আমি রান্না করে ঘেমে যাওয়াতে একদম স্নান করে বসার ঘরে যাবো ভাবলাম।তাই দেরী না করে স্নান সেরে শাড়ি পড়তে পড়তে বাবা-মা আর আমার ছোট ভাইয়ের গলার শব্দ পেলাম।

ভাবলাম মনের ভুল তারপর শাশুড়ির মায়ের ডাক পড়লো পিহুক এসো সব রেডি।
বসার ঘরে গিয়ে আমার চোখ ছানাবড়া ও বাড়ি থেকে সত্যি সত্যি মা-বাবা,ভাই এসেছে। অথচ এসবের কিছুই আমি জানতাম না। শাশুড়ী মা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলছে তোমরা বসে পড়ো আসনে।

এপাশে দুই জামাইবাবু আর আমি আমাদের ষষ্ঠী করছে আমার শাশুড়ী মা আর আমার পাশে অভ্রকে বসিয়ে ষষ্ঠী পালন করছে আমার মা। আচ্ছা ভাবুন তো কি সুন্দর দৃশ্য! সব আয়োজন সব প্ল্যানিং কিন্তু এই পরিবারের।আমার শাশুড়ী মায়ের এই ইচ্ছে নাকি অনেক দিনের সে শুধু জামাইদের না ঘরের বউকেও তার যোগ্য সম্মান দিবে।

একটা মেয়ে কতটা ভাগ্যবতী হলে এমন শাশুড়ী শ্বশুর আর বর পায় বলুন তো!

কেটে গেছে গত আট বছর ঠিক এভাবেই জামাইবাবুদের সাথে আমার জন্যেও বৌমা ষষ্ঠীর আয়োজন হয় প্রতিবছর আর পুরো আয়োজনের দায়িত্ব আমার শাশুড়ী মায়ের।

প্রথম বার আমি রান্না করলেও পরের বছর থেকে অন্তত এদিন রান্না ঘরে যাওয়া আমার জন্য নিষিদ্ধ।

সত্যি জীবন সুন্দর!
লেখাঃ Smritikotha Datta – স্মৃতিকথা দত্ত

Read More :

কতদিন কতরাত কেবল পরিচিত ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে

নতুন বউকে পালকি করে কেন আনা হয় জানিস?