ফ্রী আছিস?

– কেন?
– একটু কথা বলবি?
– এই তো সকালে কথা বললাম। আবার কি বলবি?
– খুব মন খারাপ করছে রে। একটু কথা বল।
– আবার শুরু হলো তোর। ভালো লাগে না তোর এই রোজ রোজ ন্যাকামিগুলো।
– তোর আমার সব কিছু ন্যাকামি মনে হয়?
– জানি না। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। শুভ রাত্রি।

( পরের দিন মেয়েটার আর ফোন আসেনি ছেলেটার ফোনে। ছেলেটার কিছু মনেও হয়নি। তার পরের দিনও ফোন এলো না। ছেলেটা একটু অবাক হলো তবে বেশি ভাবলো না। মেয়েটাকে ফিরে ফোন করার চেষ্টাও করেনি। পরের দিন ছেলেটার কাছে একটা চিঠি পৌঁছায়। চিঠিটার খামের ওপরে লেখা, From – রাত্রি। ছেলেটা চিঠিটা বিছানার ওপরে ফেলে দিয়ে অফিস চলে গেল। ছেলেটা যে মেয়েটাকে ভালোবাসে সেটা আজ বোঝাই দায়। ভালোবাসার পরিবর্তন হওয়ার কারণটা ঠিক জানা নেই। বোধ করি ব্যস্ততা গ্রাস করেছিল। দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছিল। ছেলেটার অফিস গিয়ে মনে হলো মেয়েটাকে ফোন করা উচিৎ একবার। ফোন করলো সে। কলারটিউনে বেজে উঠলো সেই একই গান, “হামে তুমসে পেয়ার কিতনা ইয়ে হাম নেহি জানতে মাগার জি নেহি সাকতে তুমহারে বিনা।” ছেলেটার মনে কিছু একটা হচ্ছিল। তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে চিঠিটা খুললো। চিঠিটায় লেখা ছিল- )
প্রিয়
শুভ্র,

ছোটবেলায় মা কে হারিয়েছি। বাবা আর একবার বিয়ে করে। ছোট মা কোনোদিনই আমাকে মেয়ে বলে মেনে নিতে পারেনি। বাবার সাথেও দূরত্ব টা অনেকটা বেড়ে গেল। আপনজন বলতে একজনই ছিল, ঠাম্মা। তিনিও মারা গেলেন। আমি তখন ক্লাস টেন। সবই তো জানিস তুই। তারপরে তোর সাথে পরিচয়। কখন যে দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম সেটা দুজনেরই অজানা। সম্পর্ক টা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। তুই পড়তে বাইরে চলে গেলি। এখানে আমি একা থেকে গেলাম। ছোট মায়ের ভাই আমায় সেই রাতে….. থাক আর কিছু বললাম না। সবই তো জানিস। সব দোষটাই পড়েছিল আমার ঘাড়ে। বাবাও আমার সাথে থাকেনি সেদিন। একটা স্কুলে পড়াতাম বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম। শধুমাত্র বেঁচে ছিলাম তোর কারণে। তুই পাশে ছিলি বলে। আজ বোধ হয় তুই খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছিস। তাই আমায় আর সময় দিয়ে উঠতে পরিসনি। কিন্তু বিশ্বাস কর আমার দুঃখ গুলো, কষ্ট গুলো ন্যাকামি ছিল না। মিথ্যে ছিল না। ঠাম্মা মারা যাওয়ার পর তোকেই তো আপন মেনে সব বলতাম। আগে তো তুই এমন ছিলি না। হঠাৎ কেন এমন হয়ে গেলি? আমার শুভ্রকে খুব অচেনা লাগছে। আমি আর পারলাম না রে। নিজের মধ্যে কষ্টগুলো চেপে রাখার ক্ষমতা আমার আর হয়ে উঠছিল না। তাই কিছু না ভেবে চিরনিদ্রায় চলে গেলাম। তোকে আর ফোন করে জ্বালানোর আর কেউ থাকলো না। ভালো থাকিস। সুস্থ থাকিস সবসময়। জানিস, তোকে ওই গানটা খুব শোনাতে ইচ্ছে করছে, “হামে তুমসে পেয়ার কিতনা ইয়ে হাম নেহি জানতে মাগার জি নেহি সাকতে তুমহারে বিনা।”